টেটের প্রশ্নপত্র উধাওয়ের ঘটনায় ডাক বিভাগের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে সিআইডি-র প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট মোটেই মিলছে না। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ওই পরীক্ষার প্রশ্ন কী ভাবে কোথায় লোপাট হল, তা নিয়ে ধন্দ বাড়ছে।
পশ্চিমবঙ্গের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল (সিপিএমজি) ডাক বিভাগের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সোমবার সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে, সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতর থেকে গত বৃহস্পতিবার বাসে সব প্রশ্নপত্রের প্যাকেট তোলা হয়নি। একটি প্যাকেট সম্ভবত বাসে ওঠেইনি।
সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে সিআইডি মঙ্গলবার বলেছে, পর্ষদের সিসিটিভি দেখাচ্ছে, ১৫৪টি ব্যাগই বাসে তোলা হয়েছিল। সে-দিন সেখানে উপস্থিত পর্ষদকর্মী-ডাককর্মীরাও সব প্যাকেট বাসে তোলার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। বাস থেকে ঠিক কোথায় প্যাকেটটি গায়েব হতে পারে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাচ্ছে সিআইডি। সংশ্লিষ্ট বাসের চালকের দাবি, মাইতিপাড়ার কাছে এক লরিচালক তাঁকে জানান, বাসের পিছনের ফাইবার গ্লাস ভাঙা। একটি প্যাকেট ঝুলছে। বাসে থাকা ডাককর্মী এবং পুলিশকর্মীদের বক্তব্য, বাসের পিছনের আসনে প্রশ্নপত্র রাখা ছিল সিলিং পর্যন্ত। তাই ওই ফাইবার গ্লাস কখন খুলে গিয়েছে, তা তাঁরা জানতে পারেননি। এক তদন্তকারী জানান, মনে হচ্ছে, ওই ডাককর্মী ও পুলিশকর্মীরা ঠিক বলছেন না।
গোয়েন্দাদের অনুমান, প্রশ্নপত্র লোপাট হয়েছে নিবেদিতা সেতু থেকে ডানকুনি মাইতিপাড়ার মাঝখানের রাস্তায়। নিবেদিতা সেতু দিয়ে বেলা ১১টা ৮ মিনিট নাগাদ বাসটি প্রশ্নপত্র নিয়ে ডানকুনির দিকে যায়। ১২টা ৪১ মিনিট নাগাদ ফের সল্টলেকের দিকে ফেরে। সিসিটিভি-র ফুটেজে প্রথম বার দেখা গিয়েছে, বাসের পিছনের গ্লাস ঠিক ছিল। কিন্তু ফেরার সময় একটি গ্লাস ছিল খোলা। তাই গোয়েন্দাদের অনুমান, এর সঙ্গে ভিতরের কেউ যুক্ত ছিলেন। বাস থেকে ব্যাগ রাস্তায় পড়ে গেলে তা অন্য কারও চেখে পড়া উচিত ছিল। তেমন প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। উধাও প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের খোঁজও মঙ্গলবার পর্যন্ত পাননি গোয়েন্দারা।
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ওই বাসে থাকা দুই ডাককর্মীকে। কিন্তু একই বাসে প্রশ্নপত্রের পাহারায় থাকা দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মিললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
No comments:
Post a Comment